ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নে সোমবার (২২ আগস্ট/২২) তেরশিরা কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীদের মাঝে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসী বিক্ষুব্দ হয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের সময় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোস্তাফিজুর রহমান আকন্দ সাগর পালিয়ে যানএ
তেরশিরা গ্রামের বাসিন্দা ইসমাঈল হোসেন জানান, তেরশিরা কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোস্তাফিজুর রহমান আকন্দ সাগরের নিকট থেকে সোমবার সকালে তিনি ব্যাথার জন্য ওষুধ নেন। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে দেয়া প্যারাসিটামলের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়ে গেছে দেখতে পান। বিষয়টি অবহিত করার পর তিনি আমাকে ওষুধ বদল করে দেন। এরপরে ৫মাসের অন্তঃস্বত্বা সোমা আক্তারও ওষুধ নেন। তিনিও জানান, তাকে দেয়া ফেরাস ফিউমারেট এন্ড ফলিক এসিড ট্যাবলেটের মেয়াদ ১৩ ফেব্রুয়ারি/২২ তারিখে শেষ হয়ে গেছে। আরেক অন্তঃস্বত্ত্বা জুলেখা আক্তার জানান, তাকে দেয়া ৩প্রকারের ওষুধের সবগুলোতে মেয়াদ উর্ত্তীণ। তেরশিরা গ্রামের নুরুল আমিন জানান, এ ক্লিনিকের ওষুধ (স্যালমমিন সিরাপ) আমি সিএইচসিপি সাগরের ফার্মেসী থেকে কিনে এনেছি। সরকারি ওষুধ তার ফার্মেসীতে বিক্রি করা হয়।
এদিকে মেয়াদ উর্ত্তীণ ওষুধের পর গ্রামে ছড়িয়ে পরার পর শত শত মানুষ মেয়াদ উর্ত্তীণ ওষুধ নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে সমবেত হন। এ ঘটনায় এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বিষয়টি টের পেয়ে সিএইচসিপি সাগর পালিয়ে যায়। এ সময় শত শত গ্রামবাসী তার মোটর সাইকেলের পিছনে ধাওয়া করে। এরপরে কমিউনিটি ক্লিনিনের সামনে এ ঘটনার বিচার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সমাবেশে এমরান হোসেন হীরা জানান, সাগর মাঝে মধ্যে অফিসে আসেন। তিনি নিয়মিত না আসার কারণেই ওষুধের মেয়াদ চলে গেছে। আব্দুল লতিফ খান (৭৫) জানান, এ কমিউনিটি ক্লিনিক মাসে/দু’মাসে এক-দুবার খোলা হয়। ওষুধ বিতরণ করা হয় না। তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য লোকমান হেকিম বলেন, বারবার উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বলার পরেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মিরাজ আলী ফকির জানান, আমাদের ছোট্ট শিশু ও গর্ভবর্তী মাদের মাঝে ৬মাস যাবত মেয়াদ উর্ত্তীণ ওষুধ দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনার বিচার চাই।
কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি ও রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মামুন কবীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গ্রামবাসীর নিকট মেয়াদ উর্ত্তীণ ওষুধ দেয়ার বিষয়টি আমি জেনেছি। সিএইচসিপি সাগরকে বারবার বলার পরেও তিনি নিয়মিত আসেন না। সিভিল সার্জন বরাবরেও অভিযোগ দেয়া হয়েছিলো, তারপরেও তিনি নিয়মিত হননি। তিনি আরো বলেন, আসলে সেখানে লোকজন অশৃঙ্খল হয়ে গিয়েছিলো। তাই চলে এসেছি।
সিএইচসিপি মোস্তাফিজুর রহমান আকন্দ সাগর বলেন, আমি ক্লিনিক থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিতরণ করি নাই। একটি চক্র মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এনে মিথ্যা অভিযোগ চাপাচ্ছে আমার ওপর।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল আহমেদ নাসের বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিতরণের ঘটনা জানার পরে তদন্ত কমিটি করেছি, প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।